২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

হাটহাজারীতে কওমী-সুন্নি সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা জারি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। ‎শনিবার (৬ সেপ্টম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আন্দুল্লাহ আল মুমিন এক আদেশে ১৪৪ ধারা জারি করেন।

‎আদেশে বলা হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলাধীন মীরের হাট থেকে এগারো মাইল সাবস্টেশন পর্যন্ত এবং উপজেলা গেইট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, হাটহাজারী পর্যন্ত রাস্তার উভয়পার্শ্বে এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় আজ রাত ১০টা থেকে আগামীকাল রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।‎

‎ওই সময়ে উল্লিখিত এলাকায় সকল প্রকার সভা সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও সকল প্রকার দেশি অস্ত্র ইত্যাদি বহনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৫ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।‎

‎চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসার ‎সামনে এক যুবক অবমাননাকর অঙ্গভঙ্গি করে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে হাটহাজারীতে দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

এদিন সকালে ওই ছবি ফেসবুকে পোস্ট দেন আরিয়ান ইব্রাহিম নামে এক যুবক। এ ঘটনায় কওমি মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ‎পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফটিকছড়ি থানা পুলিশ পৌর সদর থেকে আরিয়ান ইব্রাহিম নামে ওই যুবককে আটক করে। আটক আরিয়ান ইব্রাহিম পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড়ের মুহাম্মদ মুছার ছেলে। আটকের পর তিনি ভিডিও বার্তায় উক্ত কর্মাকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চান।‎

‎এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকেল থেকে হাটহাজারী পৌর এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্র ও স্থানীয়রা। পৌরসভার গোল চত্বরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। সেখানে একটি বাস ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। এতে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এরপর মাদরাসা শিক্ষার্থী ও সুন্নি মতাদর্শদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।‎ সাড়ে ৭টার পর থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম-রাঙাামাটি আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। হাটহাজারী বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়। গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় বাসচালক মোহাম্মদ সেলিম আহত হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফটিকছড়ি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আরিয়ান ইব্রাহিম সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে ওই ছবি পোস্ট করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে কওমি মহলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফটিকছড়ি থানা পুলিশ তাকে পৌর সদর থেকে আটক করে। আটক হওয়ার পর তিনি ভিডিও বার্তায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউসার মাহমুদ বলেন, জশনে জুলুসকে কেন্দ্র করে কওমী ও সুন্নিপন্থীদের মধ্যে কিছু ঘটনার জেরে উত্তেজনা চলছে। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি, পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।