২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে এবার লড়াই করে হারল পাকিস্তান

মাঠের বাইরে দুই দলের লড়াই যতই উত্তাপ ছড়াক না কেন, ২২ গজের লড়াইটা দিন দিন একপেশে হয়ে যাচ্ছে। শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে ক্রিকেটীয় লড়াইয়ে আগের মত সুবিধা করতে পারছে না পাকিস্তান।গ্রুপ পর্বের দেখায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে বিদায় করতে পারেনি সালমান আগার।মাত্র ১৩০ রানের টার্গেট দিয়ে হেরেছিল ২৫ বল বাকি থাকতেই।

সুপার ফোরেও নিয়তি পাল্টাতে পারেনি পাকিস্তান। এবার অবশ্য কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে দলটি।রবিবার দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম আগে ব্যাট করতে নেমে ১৭২ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দিয়েছিল। তবে ওপেনিং জুটিতে অভিষেক-গিলের শতরানের ঝড়ো জুটি সেই লক্ষ্যকে মামুলি বানিয়ে দেয়। পরে দ্রুত কিছু উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তান ম্যাচে ফেরা চেষ্টা করলেও সফল হয়নি।৭ বল বাকি থাকতে ছয় উইকেট হাতে নিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।

১৭২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওপেনিং জুটিতেই ম্যাচ ছিনিয়ে নেয় ভারত। দুই ওপেনার অভিষেক শর্মা ও শুবমান গিল মিলে ৯.৫ ওভারে যোগ করেন ১০৫ রান। গিল ২৮ বলে ৮ চারে ৪৭ রানে ফিরলে ভাঙে শুরুর জুটি। দ্রুত সময়ে শূন্য রানে সূর্যকুমার যাদবকেও বিদায় দিয়ে চাপ তৈরির চেষ্টা করে পাকিস্তান। কিন্তু অপরপ্রান্তে অভিষেকের ম্যাচসেরা ঝড়ো ব্যাটিং এটা নিশ্চিত করে, মিডল অর্ডারে যাতে তেমন চাপ নিতে না হয়। ৩৯ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৪ রানে জয়ের মঞ্চ গড়তে ভূমিকা রাখা অভিষেক ফেরেন দলের ১২৩ রানে। তখন ৪৬ বলে দলের প্রয়োজন ৪৯ রান। তার পর দলের ১৪৮ রানে সাঞ্জু স্যামসন (১৩) কাটা পড়লে ১৮.৫ ওভারে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তিলক বর্মা (৩০) ও হার্দিক পান্ডিয়া (৭)। তিলকের ১৯ বলের ইনিংসে ছিল ২টি চার ও ২টি ছয়।

পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে আলো ছড়ান শুধু হারিস রউফ। ২৬ বলে নেন ২টি উইকেট। একটি করে নেন আবরার আহমেদ ও ফাহিম আশরাফ।

এর আগে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমে ব্যাট করে নিজেদের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। টস হেরে ৫ উইকেটে করে ১৭১। তবে শুরুর পর যে গতি ছিল, তাতে এই রান একেবারেই যথেষ্ট মনে হয়নি। শেষ দশ ওভারে তারা করতে পেরেছে মাত্র ৮০ রান, অথচ ইনিংসের অর্ধেক পথে পতন হয় মাত্র এক উইকেটের।

একপর্যায়ে টানা ৩৯ বল কোনও বাউন্ডারি আসেনি। সেই ধীরগতিই একসময় জমে ওঠা ইনিংসকে পরিণতি পেতে দেয়নি। আরও হতাশার বিষয়—ভারতের প্রধান স্পিন হুমকি সামলালেও (মধ্য ওভারের শুরুতে তিনটি ছক্কা), পার্ট-টাইম বোলার শিবম দুবের কাছে ধরা খায় তারা।

দুবে ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট—দুজনই ছিলেন সেট ব্যাটার; একজন শাহেবজাদা ফারহান, আরেকজন সাইম আইয়ুব। দ্বিতীয় উইকেটে তারা তুলেছিলেন ৭২ রান। ৩৪ বলে ৫১ রানে পৌঁছে যাওয়া ফারহান শেষ পর্যন্ত করেন ৪৫ বলে ৫৮। এটাই দলের সর্বোচ্চ ইনিংস। যাতে ছিল ৫টি চার ও ৩টি ছয়। সাইম ১৭ বলে করেন ২১। শেষদিকে ফাহিম আশরাফের ৮ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ২০* পাকিস্তানকে দেয় ভরসা করার মতো স্কোর। ১৩ বলে অপরাজিত ১৭* রান করে অবদান রাখেন অধিনায়ক সালমান আগাও।

মাঝের ওভারগুলোতে পুরো এশিয়া কাপে ওমান ও আমিরাত ছাড়া সবচেয়ে ধীরগতির দল ছিল পাকিস্তান। এদিন তারা সেই পরিসংখ্যান পাল্টানোর মতো অবস্থায় ছিল। কিন্তু দুবের ব্রেকথ্রু আর বরুণ চক্রবর্তী (৪-০-২৫-০) ও কুলদীপ যাদবের (৪-০-৩১-১) নিখুঁত বোলিং শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানকে ছাপিয়ে গেছে। হার্দিকও ৩ ওভারে ২৯ রানে নেন একটি উইকেট।