১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

‘জেন-জি’ বিক্ষোভে উত্তাল মরক্কো, সরকারের পদত্যাগ দাবি

উত্তর আফ্রিকার মরক্কোতে তরুণদের সংগঠন ‘জেন-জি’–র নেতৃত্বে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে; ভালো সরকারি পরিষেবা ও দুর্নীতির অবসানসহ বিভিন্ন সামাজিক দাবি নিয়ে আন্দোলনটি টানা ষষ্ঠ দিনে পৌঁছে। আন্দোলনটি এখন সরাসরি সরকারের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছে।

মিডল ইস্ট আইয়ের  রিপোর্ট অনুযায়ী বিক্ষোভ আমলে মঙ্গলবার ও বুধবার পুলিশি দমন-পীড়নে সহিংসতা দেখা যায়; পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যদিও পরে রাবাত, কাসাব্লাঙ্কা, মারাকেশ ও আগাদিরে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) যে বিক্ষোভ হয়েছে সেগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

বিক্ষোভের আয়োজকরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের আহ্বান জানানো সত্ত্বেও আন্দোলন দ্রুত তীব্র রাজনৈতিক রূপ ধারণ করে। সম্প্রতি গঠিত ‘জেন-জি ২১২’ গ্রুপটি সরকারের পদত্যাগের পাশাপাশি দুর্নীতির জন্য দায়ীদের বিচারের ন্যায্য প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি তুলেছে। তারা বলেছে, মরক্কোর সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করতে এবং সামাজিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় বর্তমান সরকারকে ভেঙে দিতে হবে।

প্রাথমিকভাবে সরকার কঠোর ব্যবস্থা ও গণগ্রেপ্তার নির্ভর করলেও পরে সমাবেশের অনুমতি মেনে নেয় এবং কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জনসমক্ষে তাদের ব্যর্থতাও স্বীকার করতে শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী আজিজ আখানুশ আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে জানালেও জেন-জি ২১২ এই ব্যবসায়ী-নেতৃত্বাধীন সরকারকে দেশের গভীর বৈষম্যের প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করছে।

সংসদেও মন্ত্রীরা স্বীকার করেছেন যে সামাজিক খাতে সরকারের পদক্ষেপ পর্যাপ্ত ফল বয়ে আনেনি—স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্কারের অপ্রতুল সফলতার কথা স্বীকার করেছেন এবং আবাসন মন্ত্রীরাও ব্যর্থতার কথাই বলেছেন।

জেন-জি ২১২–এর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সদস্যসংখ্যা সীমিত (প্রতিবেদন অনুসারে ডিসকর্ড পেজে প্রায় দেড় লক্ষ সদস্য) হলেও তাদের অরাজনৈতিক দাবি দ্রুত জনসমর্থন পাচ্ছে এবং সরকারে চাপ বাড়াচ্ছে। ফরাসি পত্রিকা জেউন আফ্রিকা উদ্ধৃত করে এক নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, কর্তৃপক্ষের কাছে আন্দোলন থামানোর সীমিত বিকল্পই রয়ে গেছে। কাসাব্লাঙ্কার একটি ব্যবসায়ীর অভিমত—আখানুশকে বরখাস্ত করাই রাজপ্রাসাদের হাতে থাকা একমাত্র তাৎক্ষণিক উপায়, যা বিক্ষোভকারীদের দাবি মেটাতে পারে।

সূত্র: মিডল ইস্ট আই