১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বাংলাদেশিসহ সব বিদেশি কর্মীর জন্য বড় সুখবর সৌদির

সৌদি আরব বিদেশি শ্রমিকদের জন্য যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৫০ বছরের পুরোনো ‘কাফালা’ বা পৃষ্ঠপোষকতা ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করেছে দেশটির সরকার। বহুদিন ধরেই এই কাফালা ব্যবস্থার কারণে বিদেশি কর্মীদের ভাগ্য নির্ভর করত নিয়োগকর্তার ওপর, যা অনেক ক্ষেত্রে শোষণ ও নির্যাতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

২০২৫ সালের জুনে ঘোষিত এই বড় সংস্কারের ফলে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ বিদেশি শ্রমিক সরাসরি উপকৃত হবেন, যাদের অধিকাংশই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে সৌদিতে কাজ করতে গেছেন। (সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া)

নতুন আইনের আওতায় প্রবাসীরা এখন থেকে চাকরি পরিবর্তন, দেশ ত্যাগ বা ভিসা নবায়নের ক্ষেত্রে আর নিয়োগকর্তার কঠোর অনুমতির মুখে পড়বেন না। সৌদি সরকার কাফালার পরিবর্তে চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান মডেল চালু করেছে, যা শ্রমিকদের স্বাধীনতা ও অধিকার সুরক্ষায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।

সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানিয়েছে, নতুন ব্যবস্থায় অভিবাসী শ্রমিকরা এখন থেকে তাদের বর্তমান নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই চাকরি পরিবর্তন, এক্সিট ভিসা ছাড়াই দেশ ত্যাগ এবং আইনি সুরক্ষা পাওয়ার সুযোগ পাবেন।

এই সংস্কার সৌদি ভিশন ২০৩০–এর অংশ, যার লক্ষ্য দেশের অর্থনীতিকে আধুনিক করা এবং বিদেশি শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা। মানবাধিকার সংগঠনগুলো একে সৌদির শ্রম ইতিহাসে “একটি নতুন অধ্যায়” হিসেবে বর্ণনা করেছে। তবে তারা বলছে, এই সংস্কার সফল করতে হলে কার্যকর বাস্তবায়ন ও কঠোর তদারকি প্রয়োজন।

‘কাফালা’ (আরবি: كفالة) শব্দের অর্থ ‘স্পন্সরশিপ’ বা পৃষ্ঠপোষকতা। ১৯৫০-এর দশকে উপসাগরীয় অঞ্চলে চালু হওয়া এই আইনি কাঠামোর অধীনে শ্রমিকদের আইনি মর্যাদা নির্ভর করত নিয়োগকর্তার ওপর। এর ফলে শ্রমিকরা কাজ পরিবর্তন, দেশ ছাড়ার অনুমতি বা আইনি সহায়তার ক্ষেত্রেও নিয়োগকর্তার নিয়ন্ত্রণে ছিলেন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে লাখো শ্রমিক শোষণ ও অধিকারহীনতার শিকার হন।

সৌদি আরবের এই সংস্কার শ্রমিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদার ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।