১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পর্তুগালে জনসমক্ষে বোরখা পরা নিষিদ্ধ: সংসদে ‘বিতর্কিত আইন’ অনুমোদন

পর্তুগালের সংসদে জনসমক্ষে মুখ আবৃত করে এমন পোশাক, বিশেষত বোরখা, পরিধান নিষিদ্ধ করার ‘বিতর্কিত আইন’ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দেশটির জাতীয় সংসদে এ আইন অনুমোদিত হয়। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশটি ইউরোপের অন্যান্য কয়েকটি দেশের মতো ‘মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধ’ নীতির পথে হাঁটছে।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, জনসমাগমপূর্ণ বা জনাকীর্ণ স্থানে এমন কোনো পোশাক পরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হবে, যা মুখমণ্ডল পুরোপুরি ঢেকে রাখে। সরকারের দাবি—এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধ দমন সহজ করা এবং নাগরিকদের পরিচয় দ্রুত শনাক্ত করা।

তবে কিছু ব্যতিক্রমও রাখা হয়েছে—যেমন ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী বা চিকিৎসাজনিত কারণে মুখ ঢাকার ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।

আইন অনুযায়ী, নিয়ম লঙ্ঘন করলে ২০০ ইউরো থেকে ৪,০০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।

সংসদে অনুমোদনের পর এখন প্রস্তাবিত আইনটি সংবিধান ও মানবাধিকারবিষয়ক সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হবে। সেখানে এর সাংবিধানিক বৈধতা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা হবে।

সরকারি দল এই আইনকে নিরাপত্তা ও সামাজিক সংহতির জন্য অপরিহার্য পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করলেও, বিরোধী দলগুলো একে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে তীব্র সমালোচনা করেছে।

বর্তমানে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রিয়াসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে বোরখা বা মুখ ঢাকা পোশাক জনসমক্ষে নিষিদ্ধ। ধারণা করা হচ্ছে, পর্তুগালও শিগগিরই সেই তালিকায় যুক্ত হবে।

তবে মুসলিমরা মনে করেন, বিতর্কিত এই আইনটি সরাসরি মুসলিম নারীদের ধর্মীয় অধিকার ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। তাদের মতে, এটি ধর্মীয় অনুশীলনের স্বাধীনতা সীমিত করে ইউরোপে ইসলামফোবিয়ার নতুন উদাহরণ তৈরি করেছে।

সূত্র, রয়টার্স