ইতালির কিংবদন্তি ফ্যাশন ডিজাইনার আরমানি ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা জর্জিও আরমানি ৯১ বছর বয়সে মারা গেছেন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর আরমানি গ্রুপ এ তথ্য জানিয়েছে। তিনি পোশাকের নতুনত্ব ও আভিজাত্যের কারিগর ছিলেন। ফ্যাশন জগতে রীতিমতো নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন আরমানি।
এক বিবৃতিতে আরমানি গ্রুপ বলেছে, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আরমানি গ্রুপ তার স্রষ্টা, প্রতিষ্ঠাতা ও অক্লান্ত চালিকাশক্তি জর্জিও আরমানির মৃত্যুর খবর জানাচ্ছে।
অসুস্থতার কারণে গত জুন ও জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত নিজের শেষ তিনটি শোতে অনুপস্থিত ছিলেন আরমানি। চলতি মাসের শেষের দিকে মিলানের পিনাকোতেকা দা ব্রেরাতে একটি ঐতিহাসিক প্রদর্শনীসহ ব্র্যান্ডটির ৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপনে তাঁর উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
জর্জিও আরমানি এসপিএর প্রতিষ্ঠাতা ও একমাত্র শেয়ারধারী আরমানি নিজের কর্মজীবনে চারটি বড় বিলাসবহুল ফ্যাশন কোম্পানির একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। জর্জিও আরমানির নিজের নামের ব্র্যান্ডটি যাত্রা শুরু করে ১৯৭৫ সালে। ফ্যাশন জগতে নতুনত্ব আনা আরমানি ‘কিং অব দ্য ব্লেজার’ উপাধি পান। ‘আমেরিকান গিগোলো’ চলচ্চিত্রে রিচার্ড গিয়ার আরমানির ডিজাইন করা কয়েকটি পোশাক পরলে ব্র্যান্ডটি ১৯৮০ সালে প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক পরিচিতি পায়।
১৯৩৪ সালে উত্তর ইতালির পিয়াচেঞ্জায় জন্মগ্রহণ করেন আরমানি। তিনি প্রথমে চিকিৎসাবিদ্যায় তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তারপর সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে ডিগ্রি শেষ করার আগেই মিলান বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যান। এর কিছুদিন পরই আরমানি ভিন্ন ধরনের পেশা খুঁজতে শুরু করেন।
আরমানি একবার বলেছিলেন, ‘আমি প্রায় দুর্ঘটনাক্রমে ফ্যাশনের জগতে এসেছিলাম। এরপর ধীরে ধীরে এটি আমার মধ্যে এতটাই বেড়ে ওঠে যে এটি আমাকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে ফেলে, আমাকে বশ করে ফেলে।’
২০২১ সালে আরমানি ব্র্যান্ডের পণ্য ও সেবা থেকে আয় ছিল ৩৫০ কোটি পাউন্ড (৫৭ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা)। এর মধ্যে ছিল হোটেল, রেস্তোরাঁ, নাইটক্লাব, কসমেটিকস, চকলেট, এমনকি ফুলের দোকানও।
২০২২ সালে এক সাক্ষাৎকারে আরমানিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, মানুষ তাঁকে কীভাবে মনে রাখুক বলে তিনি চান। জবাবে আরমানি বলেছিলেন, একজন ন্যায়নিষ্ঠ মানুষ হিসেবে। আমি যা বিশ্বাস করি, সেটাই বলি।