মৃত ইসরাইলি জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তরকে গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্ব বলে ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে করা এক বার্তায় এ ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, “গাজায় আটক জীবিত ২০ জন জিম্মির সবাই ফিরে এসেছে। এটা খুবই ভালো হয়েছে, কারণ আমরা এমনটাই প্রত্যাশা করছিলাম।”
“যদিও একটি বড় সংকট কেটে গেছে, তবে কাজ এখনও শেষ হয়নি। কারণ সমঝোতা চুক্তির প্রতিশ্রুতি ছিল মৃত সব জিম্মির মরদেহ ফিরিয়ে দেওয়া হবে— তা এখনও ঘটেনি। তাদের অবশ্যই ফেরত দিতে হবে এবং যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় এখন থেকে শুরু হলো।”
গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন যে পরিকল্পনা প্রস্তাব আকারে হাজির করেছিলেন ট্রাম্প, ইসরাইল ও গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস তাতে সম্মতি জানানোর পর ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায়। প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় হামাসকে ট্রাম্প শর্ত দিয়েছিলেন যে গোষ্ঠীটিকে অবশ্যই জীবিত ২০ ইসরায়েলি জিম্মি এবং মৃত ২৮ জন জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করতে হবে।
যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিন সোমাবার নিজেদের কব্জায় থাকা জীবিত ২০ জন ইসরাইলি জিম্মির সবাইকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলও কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ৩ হাজার ৭০০ জনকে ছেড়ে দেয়।
২০ জীবিত জিম্মিকে মুক্তির পাশাপাশি ৪ জন মৃত জিম্মির মরদেহও হস্তান্তর করে হামাস। যুদ্ধবিরতির আগেই অবশ্য হামাস জানিয়েছিল যে তারা কিছু জিম্মির মরদেহের সন্ধান হারিয়ে ফেলেছে। এর কারণ হিসেবে গোষ্ঠীটির হাইকমান্ড বলেছে, জিম্মিদের মরদেহের ব্যাপারে যারা জানতেন তাদের হত্যা করা হয়েছে এবং ইসরাইলি বাহিনীর অথবা হামলার কারণে মরদেহগুলো যেখানে রাখা হয়েছিল, সেই স্থানের চিহ্ন হারিয়ে গেছে।
এসব জিম্মির মরদেহ খুঁজে পেতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছিল হামাস। এমনকি ৭ থেকে ৯ জিম্মির মরদেহের সন্ধান আর কখনো পাওয়া যাবে না বলেও উল্লেখ করেছেন গোষ্ঠীটির নেতারা।
এদিকে জিম্মিদের ২৮টি মৃতদেহের পরিবর্তে মাত্র ৪টি ফেরত দেওয়ায় হামাসের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে ইসরাইল। প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা থেকে প্রদান করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাস যদি জিম্মিদের মরদেহ ফেরত না দেয় তাহলে সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ রাখা ও গাজায় ত্রাণের প্রবেশ সীমিত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে ইসরাইলের সরকার।
এদিকে যুদ্ধবিরতিকে বৃদ্ধাঙ্গুুলি দেখিয়ে ফের হামলা করেছে ইসরাইল। গাজার দুটি পৃথম সিটিতে হামলা চালিয়ে অন্তত ৯ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি