জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গণভোটে চারটি মূল বিষয় থাকলেও ভোটাররা এই চার বিষয়ের ওপর একত্রে একটি প্রশ্নে মতামত জানাবেন। অর্থাৎ আলাদাভাবে কোনো প্রশ্নে মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকবে না।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, সবদিক বিবেচনা করে সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে সংস্কারের লক্ষ্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হবে না। নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে। ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা গণভোটের ব্যালটে থাকা প্রশ্নও পাঠ করে শোনান।
প্রশ্নটি হবে: আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?
প্রস্তাবগুলো হলো—
ক) নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ায় গঠিত হবে।
খ) আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট; দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের একটি উচ্চকক্ষ গঠন হবে, এবং সংবিধান সংশোধনে উচ্চকক্ষের অনুমোদন লাগবে।
গ) নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারের বিকেন্দ্রীকরণসহ ৩০টি সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
ঘ) জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়িত হবে।
গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ হলে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন করা হবে। পরিষদটি সংসদ সদস্যদের মাধ্যমেই পরিচালিত হবে এবং প্রথম অধিবেশন শুরুর ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে।
সংস্কার কার্যক্রম শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠিত হবে, যার মেয়াদ থাকবে নিম্নকক্ষের মেয়াদের সমান।