হিজরি সনের তৃতীয় মাস হলো রবিউল আউয়াল। ‘রবিউন’ শব্দের অর্থ বসন্ত। এ মাসে আরবের প্রকৃতিতে বসন্ত আসত, তাই এর নাম ‘রবিউল আউয়াল’ বা বসন্তের প্রথম মাস। মুসলিম উম্মাহর কাছে মাসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ মাসেই মানবজাতির শ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীতে আগমন করেন এবং এ মাসেই তিনি পৃথিবীকে শোকসাগরে ভাসিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। তাই রবিউল আউয়াল একই সঙ্গে আনন্দ ও বেদনার মাস।
অনেক ঐতিহাসিকদের মতে, রবিউল আউয়ালের ১২ তারিখে মহানবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেন এবং এই একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। তাই মুসলিম স্কলাররা মনে করেন, দিনটিকে কেন্দ্র করে আনন্দ উৎসব বা ইসলামে অনুমোদিত নয় এমন কুসংস্কারে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়। বরং এ মাসে মহানবী (সা.)-কে যেসব উদ্দেশ্য নিয়ে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, সেগুলোকে আমাদের জীবনে আরও বেশি করে চর্চা ও অনুশীলন করা উচিত।
মহানবী (সা.)-এর জন্মের দিনটিতে পৃথিবী অসংখ্য অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল, যা একজন মহাপুরুষের আগমনী বার্তা বহন করেছিল। একইভাবে তাঁর মৃত্যুর পর সাহাবিরা গভীর শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি হজরত ওমর (রা.) এতটাই শোকাহত হয়েছিলেন যে তিনি তরবারি হাতে বেরিয়ে বলেছিলেন—‘যে বলবে মহানবী (সা.) মারা গেছেন, আমি তাকে হত্যা করব।’
তাই মহানবী (সা.)-এর জন্মের কারণে ১২ রবিউল আউয়াল একদিকে যেমন আনন্দের, তেমনি তাঁর মৃত্যুর কারণে এটি বেদনারও মাস। কেবল আনন্দ প্রকাশ নয়, বরং তাঁর জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে তা নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করাই মুসলমানদের প্রধান কর্তব্য।