২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঘুমের সমস্যা এড়াতে কার্যকরি তিনটি ব্যায়াম

মাঝরাতে বা গভীর রাতে বিছানায় শুয়ে থেকেও অনেকের চোখে ঘুম আসে না। হাতে মুঠোফোন, আর অনবরত ফেসবুক বা ইউটিউব স্ক্রল করতে করতে রাত কেটে যায়। ভোরের আলো জানালায় উঁকি দিলেও ক্লান্ত চোখে ঘুমের দেখা মেলে না। অনেকে মজা করে বলেন—এ যেন আমেরিকার টাইমজোনে চলে যাওয়ার লক্ষণ! তবে মজা নয়, বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে ভাবার সময় এসেছে। কেন ঘুম হয় না, সেই কারণ খুঁজে বের করা জরুরি। কারণ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন অন্তত ৭–৯ ঘণ্টা মানসম্মত ঘুম প্রয়োজন। সুস্বাস্থ্য, মানসিক ভারসাম্য আর কর্মক্ষম জীবনের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য।

আমরা আগেই জানতাম সপ্তাহজুড়ে শারীরিক ব্যায়াম করলে ভালো ঘুম হয়, তবে আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত সময় না থাকে, তাহলে ঘুমের জন্য কোনো ম্যারাথন দৌড়াতে হবে না বা জিমে যেতে হবে না। নতুন গবেষণায় ১৩ ধরনের ওষুধ ছাড়া ইনসমনিয়া চিকিৎসা পদ্ধতিতে (ঘুমের সমস্যা বা নিদ্রাহীনতা কমানো) ৭ ধরনের ব্যায়াম, চাপ কমানোর চিকিৎসা (আকুপাংচার), ম্যাসাজ ও মনোবিদ্যার পদ্ধতি ছিল। তবে এর মধ্যে যোগব্যায়াম, তাই চি ও হাঁটা বা দৌড় সবচেয়ে ভালো ফল দেখিয়েছে।

বিশ্লেষণ অনুযায়ী, যেসব ব্যায়াম একা ইনসমনিয়ার (ঘুমের সমস্যা) চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি কাজ করে, তার মধ্যে তিনটি নিয়ে আলোচনা করা হলো:

যোগব্যায়াম:

যোগব্যায়াম ভালো ঘুমের জন্য সাহায্য করে কারণ এটি শরীর ও মনকে শান্ত করে, শ্বাস নিতে শেখায় এবং চাপ ও উদ্বেগ কমায়। এই দুইটি বিষয় সাধারণত ঘুমের সমস্যা হওয়ার বড় কারণ। প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৬ বার করে ৪৫ থেকে ৬০ মিনিট যোগব্যায়াম করলে, এক থেকে চার মাসের মধ্যে ঘুমের সময় বাড়বে। অর্থাৎ রাতের ঘুমের সময় প্রায় দুই ঘণ্টা বাড়ে এবং ঘুমিয়ে যাওয়ার পর রাতের মাঝামাঝি সময়ে জেগে থাকার সময় এক ঘণ্টা কমে।

তাই চি:

তাই চি একটি ধীর ও শান্তিপূর্ণ ব্যায়াম, যেখানে শরীর ধীরে ধীরে নড়াচড়া করে এবং শ্বাস ধীরে নেয়া হয়। এটা চাপ কমাতে ও শরীর শান্ত রাখতে সাহায্য করে। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার করে ৪৫ থেকে ৬০ মিনিট এই ব্যায়াম করলে, তিন থেকে চার মাসের মধ্যে মোট ঘুমের সময় ৫০ মিনিটেরও বেশি বাড়বে। এ ছাড়াও জেগে থাকার সময় ৩০ মিনিটের বেশি কমে।

হাঁটা বা দৌড়:

হাঁটা বা দৌড় শারীরিক ও মানসিকভাবে ঘুম ভালো করতে সাহায্য করে। এতে শরীরের শক্তি বেশি খরচ হয়, চাপ কমে, মেজাজ ভালো হয়, ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন বাড়ে এবং ঘুম আরও গভীর হয়। সপ্তাহে ৩ থেকে ৫ বার, ৩০ থেকে ৭৫ মিনিট হাঁটা বা দৌড় দিলে, তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ইনসমনিয়ার উপসর্গ কমে।

কারও ক্ষেত্রে ঘুম আসে না কিংবা রাতে ঘুম ভেঙে যায় যেটা খুবই সাধারণ সমস্যা। ২০২০ সালের এক জরিপ বলেছে, প্রায় ১৫ শতাংশ বড়দের প্রতি মাসে প্রায় প্রতিদিনই ঘুমাতে সমস্যা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে নানা কারণে ইনসমনিয়া হতে পারে, যেমন: মানসিক চাপ, খারাপ ঘুমের অভ্যাস, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, কিছু ওষুধ ও অন্যান্য ঘুমের রোগ, যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া।

সূত্র: সিএনএন