১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো হলো ৫০ ভারতীয়কে

উন্নত জীবনের স্বপ্নে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ করা ভারতের ৫০ তরুণকে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। মানব পাচারচক্রের মাধ্যমে “ডানকি রুট” ধরে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া এই তরুণদের অধিকাংশই হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও গুজরাট রাজ্যের বাসিন্দা।

রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোরে ভারতে ফেরেন তারা। ফেরত আসাদের মধ্যে হরিয়ানার কারনাল জেলার ১৬ জন, কাইথালের ১৪ জন, কুরুক্ষেত্রের ৫ জন ও পানিপথের ১ জন বাসিন্দা রয়েছেন। সবার বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক বছর ছিলেন, আবার কেউ সেখানে পৌঁছেই ধরা পড়েন।

কারনালের রাহরার বাসিন্দা ২৬ বছর বয়সী অঙ্কুর সিং জানান, ২০২২ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে তার প্রায় ২৯ লাখ রুপি খরচ হয়। চার মাসের দীর্ঘ যাত্রায় দক্ষিণ আমেরিকার একাধিক দেশ পাড়ি দেন তিনি। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জর্জিয়ায় এক মদের দোকানে কাজ করার সময় ধরা পড়ে কারাভোগের পর ফেরত পাঠানো হয় তাকে।

ফেরত আসাদের মধ্যে ছিলেন ঘোরাউন্দা ব্লকের হুসন (২১)। তার যুক্তরাষ্ট্রযাত্রায় পরিবারকে ৪৫ লাখ রুপি দিতে হয় এজেন্টদের। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর পরপরই তিনি ধরা পড়েন। তার কাকা সুরেন্দর সিং বলেন, “পরিবার জমি বিক্রি করেছিল, কিন্তু সবই বৃথা গেল।”

একইভাবে কারনালের কালসী গ্রামের শ্রমজীবী পরিবারের সন্তান হরিশ এসসি ২০২৩ সালে কানাডার কর্মী ভিসায় গিয়ে পরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। সেখানেও ধরা পড়ে জেলে যান তিনি।

কাইথাল জেলার তারাগড় গ্রামের নরেশ কুমার জানান, আমাদের ফ্লাইটে ওঠানোর সময় হাতকড়া পরানো হয়েছিল, তবে কেউ খারাপ ব্যবহার করেনি। আমি সেখানে ১৪ মাস জেলে ছিলাম। যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে তাকে ৫৭ লাখ ৫০ হাজার রুপি দিতে হয় এজেন্টদের।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৫০০ ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আটটি সামরিক, চার্টার্ড ও বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও গুজরাট রাজ্যের বাসিন্দা।

কাইথালের পুলিশ সুপার উপাসনা জানান, জেলার ১৪ তরুণকে দিল্লি থেকে আনা হয়েছে; তাদের মধ্যে একজন ছিলেন আবগারি মামলার পলাতক আসামি। জিন্দ জেলার এসপি কুলদীপ সিং জানান, তার জেলার তিনজন তরুণও ফেরত এসেছেন এবং তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।