পারস্পরিক যোগাযোগ ও যাতায়াতের ক্ষেত্রে রাস্তার গুরুত্ব অপরিসীম। একটি জাতির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও প্রগতি বহুলাংশে নির্ভর করে তার উন্নত যাতায়াতব্যবস্থার ওপর। রাস্তাঘাট পরিচ্ছন্ন রাখা এবং চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বস্তু সরিয়ে ফেলা একটি মহৎ কাজ, যা ইসলামে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ হিসেবে গণ্য।
মহানবী (সা.) এই কাজের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেছেন, ‘ইমানের সত্তরের বেশি শাখা আছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শাখা হলো এই সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং সর্বনিম্ন শাখা হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা। আর লজ্জা ইমানের অন্যতম শাখা।’ (সহিহ মুসলিম)। এই হাদিস থেকে স্পষ্ট হয় যে রাস্তার পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা এবং মানুষের কষ্ট দূর করা ইমানের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলার এই ছোট কাজটি অনেক সময় গুনাহ মাফের কারণ হতে পারে। এক হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে চলার সময় একটি কাঁটাযুক্ত ডাল দেখতে পেয়ে তা সরিয়ে ফেলল। আল্লাহ তার এই কাজ সাদরে গ্রহণ করে তার গুনাহ ক্ষমা করে দিলেন।’ (সহিহ বুখারি)। এই হাদিসটি আল্লাহর রহমত ও দয়ার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা প্রমাণ করে যে ছোট একটি সৎকাজও আল্লাহর কাছে কত বড় পুরস্কার বয়ে আনতে পারে।
আরেকটি হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি কখনো কোনো ভালো কাজ করেনি, শুধু একটি কাঁটাযুক্ত ডাল রাস্তা থেকে সরিয়েছিল। হয়তো ডালটি গাছেই ছিল, কেউ তাকে কেটে ফেলে রেখেছিল অথবা রাস্তায় পড়েছিল। সে তা সরিয়ে ফেলেছিল। আল্লাহ তার এ কাজ সাদরে গ্রহণ করেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান।’ (সুনানে আবু দাউদ)। আল্লাহ যার গুনাহ ক্ষমা করে দেন, তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়।
এই হাদিসগুলো থেকে আমরা শিক্ষা পাই যে রাস্তাঘাট পরিষ্কার রাখা এবং পথচারীর কষ্ট দূর করা কেবল নাগরিক দায়িত্বই নয়, বরং এক গভীর ইবাদতও বটে। এটি ইমানের পরিচায়ক এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের এক সহজ মাধ্যম।